রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের অগ্রগতিতে রাশিয়ার সন্তোষ প্রকাশ

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাশিয়ার
রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশনের (রোসাটম) মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচোভ।
বুধবার (১৮ মার্চ) রোসাটমের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে বাংলাদেশে সফররত লিখাচোভ মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুর প্রকল্প
পরিদর্শনে যান। এ সময় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান তার সঙ্গে ছিলেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, লিখাচোভ তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে
রূপপুর প্রকল্প এবং প্রকল্পে কর্মরত রুশ নাগরিকদের জন্য নির্মিত বিশেষ আবাসিক এলাকা
গ্রিন সিটি পরিদর্শন করেন। এ সময় কাজের অগ্রগতি এবং গ্রিন সিটির নাগরিক সুবিধা সম্পর্কে
তাকে জানানো হয়।
রোসাটম মহাপরিচালক উল্লেখ করেন, ‘প্রকল্পে নির্মাণকাজ যথেষ্ট
দ্রুত গতিতেই এগোচ্ছে। গ্রিন সিটিতে প্রাপ্ত বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা দেখে আমি খুশি হয়েছি,
আমাদের বিশেষজ্ঞরা
বিনোদন ও মেডিকেল সেবাসহ স্বাভাবিক জীবন-যাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল কিছুই এখানে পাবেন।’
এর আগে বাংলাদেশের সঙ্গে রোসাটমের দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও সুদৃঢ় করতে আলেক্সি
লিখাচোভ গত সোমবার (১৬ মার্চ) রাজধানীর ইন্টার কন্টিনেন্টাল হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে
একাধিক চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এ সময় বাংলাদেশ এবং রাশিয়ার মধ্যে স্বাক্ষরিত আন্তঃসরকারি চুক্তির
সংশোধন সংক্রান্ত একটি প্রটোকলে স্বাক্ষর করেন আলেক্সি লিখাচোভ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী
স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।
চুক্তির ফলে বাংলাদেশ দীর্ঘমেয়াদে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের এক ও দুই
নম্বর ইউনিটের পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামত কাজের
জন্য রাশান প্রতিষ্ঠানটিকে নিযুক্ত করতে পারবে। এছাড়া বিভিন্ন যন্ত্রপাতি,
খুচরা যন্ত্রাংশ
সরবরাহ এবং প্রকল্প পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট জনবল প্রশিক্ষণের জন্যও প্রতিষ্ঠানটিকে
দায়িত্ব প্রদান করা যাবে। এর ফলে রূপপুর প্রকল্পের পুরো আয়ুষ্কাল ধরে রোসাটম রক্ষণাবেক্ষণ,
পরিচালনা সংক্রান্ত
সহযোগিতা এবং মেরামত কার্য সম্পাদনের সুযোগ লাভ করবে।
সোমবার এই চুক্তি স্বাক্ষরের আগে রোসাটম প্রধান লিখাচোভ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের ক্ষেত্রে
দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার বিভিন্ন দিক নিয়ে তারা আলোচনা করেন। এর পর তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী
এ. কে. আব্দুল মোমেন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের সঙ্গেও
সাক্ষাৎ করেন এবং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
রাশিয়ার সার্বিক সহযোগিতায় নির্মাণাধীন এই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে সর্বাধুনিক
থ্রি প্লাস প্রজন্মের ভিভিইআর ১২০০ রিয়্যাক্টর ভিত্তিক দুটি ইউনিট থাকছে। প্রকল্পের মোট উৎপাদন ক্ষমতা
দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট। রোসাটমের প্রকৌশল শাখা এক্সপোর্ট (এএসই) জেনারেল কন্ট্রাক্টর
হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। জাতীয় নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ এবং আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার
(আইএইএ) কঠোর তত্ত্বাবধানে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে।
কোন মন্তব্য নেই