সরকারী নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে ঈশ্বরদীতে আকিজ বিড়ি কারখানা চালু
> শ্রমিকদের কাজে যোগদানের জন্য এলাকায় মাইকিং।
> সরকারী নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে আকিজ বিড়ি কারখানা
চালু।
> করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশংকা।
করোনা ভাইরাসের মহামারিতে দেশে যখন সব ধরণের জনসমাগম নিষিদ্ধ
ঠিক সেই সময় সরকারী নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সম্পূর্ণ স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যেই
চালু করা হয়েছে ঈশ্বরদী শহরের গোকুল নগরে অবস্থিত আকিজ বিড়ি কারখানা। সেখানে একসাথে
প্রায় সহস্রাধিক শ্রমিক একসাথে কাজ করে। শ্রমিকদের কাজে যোগদানের জন্য গত শনিবার (১১
এপ্রিল) বিকেলে গোকুল নগরসহ আশ-পাশের এলাকায় মাইকিং করা হয়। বিষয়টি এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার
সৃষ্টি করেছে। রবিবার (১২ এপ্রিল) সকাল ৬টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কারখানায় গাদাগাদি করে
কাজ করে শ্রমিকরা। কাজের সময় বেশিরভাগ শ্রমিকদের মুখেই মাক্স দেখা যায়নি। তবে বিষয়টি
ঈশ্বরদী প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানলেও অদৃশ্য কারণে কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ
করেননি।
জানা গেছে, করোনা ভাইরাস প্রার্দুভাবের কারণে গত ২৬ মার্চ
থেকে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতই ঈশ্বরদীর গোকুল
নগরে অবস্থিত আকিজ বিড়ি কারখানা বন্ধ করে রাখা হয়। এরমধ্যে সারা দেশব্যাপী করোনা ভাইরাস
মহামারি আকার ধারণ করে। সরকারের পক্ষ থেকে মসজিদে ৫ জনের বেশি মুসলিকে নামাজ আদায়
করতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। একের পর এক বাড়ানো হয় সাধারণ ছুটি। ঠিক সেই সময় ঢাক-ঢোল
পিটিয়ে উচ্চস্বরে এলাকায় মাইকিং করে চালু করা হয় আকিজ বিড়ি কারখানা। গতকাল রবিবার সকাল
থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় এক হাজার শ্রমিক সেখানে গাদাগাদি হয়ে বিড়ি
বানানোর কাজ করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শ্রমিক জানান, চাকুরি চ্যুতির ভয়
দেখিয়ে অনেকটা জোর করেই তাদের কাজে যোগদানে বাধ্য করানো হয়েছে। তারা জানান, আকিজ বিড়ি
কারখানায় প্রতিটি শ্রমিকের কাছে থাকা একেকটি কার্ডের বিপরীতে ২ থেকে ৫ জন করে শ্রমিক
কর্মরত রয়েছেন। শ্রমিকরা আরও অভিযোগ করেন, করোনা ভাইরাসের প্রার্দুভাবের সময়ে কারখানায়
কাজের জন্য তাদের নিরাপত্তা মাক্স ও হ্যান্ড গ্লোবস্ সরবরাহ করা হয়নি। মানা হয়নি সামাজিক
দুরুত্ব বা স্বাস্থ্যবিধি। সেখান থেকেই মহামারি করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশংকা করছেন
তারা। শ্রমিকরা আরও অভিযোগ করেন, আকিজ বিড়ি কোম্পানীর পক্ষ থেকে তাদের কোন ধরণের সাহায্যে-সহযোগীতা
করা হয়নি।
এবিষয়ে আকিজ বিড়ি কারখানার ব্যবস্থাপক আলমগীর কবীর মাইকিং
করে কারখানা চালুর কথা স্বীকার করে বলেন, প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মৌখিক অনুমতিতে
কারখানা চালু করা হয়েছে। তারা স্বাস্থ্য বিধি মেনে কাজ করার জন্য অনুমতি দিয়েছেন।
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বাহাউদ্দিন ফারুকী বলেন,
শ্রম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেউ কারখানা চালু করলে সেখানে
পুলিশের কোন অনুমতির প্রয়োজন নেই। বিষয়টি তাদের জানা রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শিহাব রায়হান জানান, বিষয়টি
তিনি ওসি মাধ্যমে জেনেছেন। উর্ধ্বতন মহলে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে
জানান।
কোন মন্তব্য নেই