ত্রাণের বস্তা নিয়ে গভীর রাতে সেই ভিক্ষুকের বাড়িতে ডিসি
রাস্তাঘাটে মানুষজন নেই। চারদিক নীরব-নিস্তব্ধ
দু’একটি ট্রাক মাঝেমধ্যে ছুটে চলছে। করোনা দুর্যোগে
এলাকার মানুষ ঘরবন্দি। কোথাও কারও সাড়াশব্দ নেই। নীরব-নিস্তব্ধ পথ ধরে শুক্রবার (০৩ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১টার দিকে বৃদ্ধা সাবিয়া
বেগমের বাড়িতে ত্রাণ নিয়ে ছুটে গেলেন নওগাঁর জেলা প্রশাসক (ডিসি) হারুন অর রশীদ।
গভীর রাতে ঘুম থেকে ডেকে তুলে তার হাতে একটি খাবারের বস্তা ধরিয়ে দেন ডিসি। যেখানে রয়েছে- চাল, ডাল, আলু, লবণ, তেলসহ অন্যান্য দ্রবাদি। এ সময় একটি কম্বলও দেয়া হয় তাকে।
শুক্রবার দুপুরে উত্তপ্ত রোদে নওগাঁ শহরের বাঙ্গাবাড়িয়া বিহারি কলোনি মাঠে ৭০ বছরের
বৃদ্ধা সাবিয়া বেগম একটি টিনের ওপর নষ্ট ভাত পানিতে পরিষ্কার করে শুকাচ্ছিলেন। আর এমন দৃশ্য দেখে নওগাঁ জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রিয়াজ খান মোবাইলে ছবি
তুলে তার ফেসবুকে পোস্ট করেন।
এ নিয়ে একটি অনলাইন পোর্টালে ‘ত্রাণ না পেয়ে নষ্ট ভাত শুকাচ্ছেন, চাল হলে রান্না করবেন ভিক্ষুক’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। বিষয়টি দেখে অনেকেই মর্মাহত হন। এরপর বিভিন্ন
স্থান থেকে ওই বৃদ্ধাকে সহযোগিতা করার জন্য যোগাযোগ করা হয়। সংবাদটি নজরে আসে জেলা প্রশাসক হারুন অর রশীদের। এরপর তিনি রাতের আঁধারে ওই কলোনির ২৫টি কর্মহীন পরিবারকে ঘর থেকে ডেকে ডেকে
ত্রাণসামগ্রী দিয়েছেন।
বৃদ্ধা সাবিয়া বেগম বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে একজন ভাত দিয়েছিল। সকালে কিছুটা নষ্ট হয়ে গেছে। নষ্ট ভাত ফেলে না
দিয়ে পরিষ্কার করে রোদে শুকাচ্ছিলাম। যাতে পরে অন্য
চালের সঙ্গে রান্না করে খেতে পারি। হঠাৎ করেই
শুক্রবার বিকেলে দুজন চাল, ডাল দিয়ে গেল। আবার রাতে এসে
ডিসি স্যার বস্তায় করে বিভিন্ন ধরনের খাবার দিলেন। ডিসি স্যারকে কাছে পেয়ে নিজের অসহায়ত্বের কথা জানালাম। ঘরে এখন প্রায় ২০-২২ কেজি চাল হয়েছে আমার।
কোন মন্তব্য নেই