পাবনা সুগার মিল বন্ধ ঘোষণা, শ্রমিক-কর্মচারীদের দফায় দফায় বিক্ষোভ
ওই চিঠিতে আরও বলা হয়, যেসব মিলে চলতি মৌসুমে আখ মাড়াই করা হবেনা সেসব এলাকায় উৎপাদিত ও কৃষকের সরবরাহকৃত আখ নিকটস্থ চালু চিনিকলে পরিবহন করে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। উৎপাদন স্থগিতকৃত মিল হতে কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চালুকৃত মিলে সংযুক্ত/বদলি পূর্বক সমন্বয় করা হবে।
পাবনা সুগার মিল বন্ধের প্রতিবাদে বুধবার সকালে মিলের শ্রমিক-কর্মচারী ও আখচাষীরা দফায় দফায় বিােভ করেন। এসময় দাঙ্গা পুলিশসহ বিপুল সংখ্যক পুলিশ মিল গেটে অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে মহাসড়ক অবরোধ করতে গেলে পুলিশ ও বিােভকারীরা মূখোমুখি হয়। এসময় পুলিশের প থেকে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালনের জন্য অনুরোধ জানানো হলে বিােভকারীরা মিলগেটে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন শ্লোগান দেয়। এসময় মিল চালুর রাখার দাবি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন শ্রমিক লীগের আঞ্চলিক শাখার সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম হোসেন, পাবনা চিনিকল শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি সাজেদুল ইসলাম শাহিন, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান উজ্জল, শ্রমিক নেতা জাহিদুল ইসলাম জাহিদ। সভাপতিত্ব করেন আখচাষী ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান আলী বাদশা।
বাংলাদেশ খাদ্য ও চিনি শিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান সনৎ কুমার সাহা বলেন, পাবনা সুগার মিলসহ ৬টি মিল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। করপোরেশন থেকে এই সংক্রান্ত একটি চিঠি শিল্প মন্ত্রণালয়কে বেশ কিছুদিন আগেই দেয়া হয়েছিল। মন্ত্রণালয় এতে সম্মতি দিয়ে মিল ৬টি বন্ধ ঘোষণা করেন।
উলেখ্য, পাবনা সুগার মিল ক্রমাগত লোকসানের কারণে বন্ধ হতে যাচ্ছে এমন খবর বেশ কিছু দিন ধরে শোনা যাচ্ছিল। মিলটি জন্মলগ্ন থেকেই ঋণ ও ঋণের সুদসহ লোকসানের বোঝা নিয়ে এতোদিন চালু ছিল। চার শত কোটি টাকারও বেশি লোকসানে পড়ায় চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন মিলটি বন্ধে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
১৯৯২ সালের ২৭ ডিসেম্বর ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া ইউনিয়নের পাকুড়িয়া মৌজায় ৬০ একর জমির উপর পাকিস্তান সরকারের আর্থিক সহযোগিতায় 'পাবনা সুগার মিল' প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে আখ মাড়াই মৌসুমে মিলটির পরীামূলক উৎপাদন শুরু হয়। মিলটি বাণিজ্যিকভাবে চিনি উৎপাদন শুরু করে ১৯৯৮-৯৯ অর্থবছরে। চালুর পর থেকেই মিলে উৎপাদন ঘাটতি ও লোকসানের কবলে পড়ে। আখের স্বল্পতা, আখ হতে চিনি আহরণের হার কম থাকা, মাথাভারী প্রশাসন, সুদসহ ঋণের কিস্তি পরিশোধ, উৎপাদিত চিনি অবিক্রীত থাকাসহ নানাবিধ সংকটে পাবনা চিনিকলের লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় চার শত কোটি টাকারও বেশী।
কোন মন্তব্য নেই