দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসছে বখাটে। এতে রাজি হয়নি স্কুলছাত্রী। তাই স্কুল গেটেই তার ওপর চালানো হয়েছে হামলা, কেড়ে নেওয়া হয়েছে মোবাইল ফোন। প্রস্তাবে রাজি না হলে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়েছে মেয়েটিকে। এ অবস্থায় ভয়ে স্কুলে ও প্রাইভেট পড়তে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে ওই কিশোরী। তার পরিবারের সদস্যরাও রয়েছেন আতঙ্কে। পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পিয়ারাখালী এলাকায় ঘটেছে এ ঘটনা। বিষয়টি নিয়ে ঈশ্বরদী থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন মেয়েটির বাবা।
অভিযুক্ত বখাটের নাম মো. আপন শেখ। সে শহরের পশ্চিমটেংরি পিয়ারাখালী এলাকার মৃত ইয়ারুল ইসলামের ছেলে।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক শিক্ষার্থী ও থানায় দেওয়া অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, পিয়ারাখালী পশ্চিমপাড়ায় পরিবারের সঙ্গে থাকে ওই ছাত্রী। ঈশ্বরদীর এসএম মডেল সরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সে। দীর্ঘদিন ধরে তাকে প্রেমের প্রস্তাবসহ নানা কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল বখাটে আপন শেখ। এতে রাজি না হওয়ায় মেয়েটিকে হত্যার হুমকিও দেয় সে। এতে ভয়ে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেয় ওই ছাত্রী।
সোমবার ভর্তি-সংক্রান্ত কাজে স্কুলে যায় মেয়েটি। কাজ শেষে বাড়ি ফেরার জন্য স্কুল গেটে রিক্সার অপেক্ষায় ছিল সে। এ সময় তার ওপর হামলা চালিয়ে গলায় চাকু ঠেকিয়ে প্রেমের প্রস্তাবে রাজি হতে বলে আপন। পরে মেয়েটির মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে প্রেমে রাজি না হলে হত্যার হুমকি দেয়। এ সময় মেয়েটির চিৎকারে সহপাঠী ও পথচারীরা এগিয়ে এলেও ততক্ষণে আপন পালিয়ে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে স্কুল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরুল কায়েসকে জানায়। ইউএনও ঈশ্বরদী থানার ওসিকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেন।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা বলেন, দীর্ঘদিন থেকে আমার মেয়েকে নানাভাবে প্রেম নিবেদন ও কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছে আপন শেখ। সে ফেসবুকে ফেইক আইডি খুলে আমার মেয়েকে কুরুচিপূর্ণ মেসেজ দিয়েছে, নানাভাবে টাকা-পয়সা চেয়েছে, প্রেমে রাজি না হলে হত্যার হুমকি দিয়েছে। এসব নিয়ে এলাকায় একাধিকবার সালিশ বৈঠক করেও তাকে নিষেধ করা হয়েছে। সর্বশেষ সোমবার স্কুল গেটে প্রকাশ্যে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় আমরা শঙ্কিত হয়ে পড়েছি। মেয়ে ভয়ে লেখাপড়া ছেড়ে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। স্কুলে ও প্রাইভেট পড়তে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে তার।
সরকারি এসএম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আয়নুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় আমরা ক্ষুব্ধ। স্কুলের পক্ষ থেকে অপরাধীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসন ও থানায় বলা হয়েছে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান বলেন, লিখিত অভিযোগটি পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।