সাত মাস বয়সী যমজ বোন তাসকিয়া ইসলাম তানহা ও তাকিয়া ইয়াসমিন তিন্নি শুক্রবার মায়ের সঙ্গে ঘুমিয়ে ছিল। পাহাড় ধসে মা শাহিনুর বেগম মারা গেলেও বেঁচে যায় দুই যমজ শিশু।
শিশুদের বাবা জয়নাল আবেদীন বলেন, আমি ও আমার ছেলে রাতে তাদের খালা নার্গিসের বাসায় ছিলাম। যখন বৃষ্টি শুরু হয় তখন তাদের বলেছিলাম সেখান থেকে চলে আসতে, কিন্তু তারা আসেনি। তবে আসবে বলেছিল। এর কিছুক্ষণ পরই পাহাড় ধসের খবর পাই। ঘটনাস্থলে এসে দেখি আমার স্ত্রী ও তার বোন মারা গেছে। তবে আমার দুই মেয়ে মায়ের সঙ্গে থেকেও আল্লাহর রহমতে ভালো আছে। তাদের কিছু হয়নি। আর ছেলে আমার সঙ্গে থাকায় বেঁচে যায়।
শিশুদের চাচা ইমরান হোসেন রানা বলেন, ভাবি দুই সন্তানকে বাঁচিয়ে নিজে মারা গেলেন। এখন কে দেখবে তাদের তিন সন্তানকে? আসলে পাহাড়ের পাদদেশে কেন এ বৃষ্টির মধ্যে থাকতে গেল বিষয়টি আমরা বুঝতে পারছি না। এখন আমার ভাই তিন বাচ্চাকে নিয়ে কী করবে, সেই চিন্তায় আছি।
শনিবার সকালে ঘটনাস্থলের কাছে প্রতিবেশী হাসি বেগম বলেন, পাহাড় ধসে শাহিনুর বেগম নিজে মারা গেলেও দুই সন্তানকে মরতে দেননি। তিনি তাদের বুকে আগলে রেখেছিলেন। যাতে তার দুই সন্তানের কিছু না হয়। দুই সন্তান আল্লাহর রহমতে বেঁচে গেছে। তাদের একটুও আঘাত লাগেনি।
এদিকে পাহাড় ধসের আরেক ঘটনায় চট্টগ্রামের ফয়েস লেক এলাকার বিজয়নগরে লিটন ও ইমন নামে দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। একসঙ্গে দুই ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা লিটনের মা-বাবা। লিটন একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন আর ইমন স্থানীয় একটি স্কুলের ষষ্ঠে শ্রেণিতে পড়াশুনা করত।
লিটন ও ইমনের মা নুর জাহান বেগম বলেন, পাহাড়ের নিচে তৈরি করা ঘরটিতে চার ছেলে ও ছেলের বউদের নিয়ে বসবাস করতাম। বৃষ্টি নামার পর আমরা আশ্রয় কেন্দ্রে চলে গিয়েছিলাম। লিটন ইমনকে নিয়ে তার শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিল। রাতের কোনো এক সময়ে তারা এখানে এসে ঘুমিয়ে পড়ে। আমরা বিষয়টি জানতামও না। রাতে আশ্রয় কেন্দ্র থেকে খবর পাই আমাদের ঘরে পাহাড় ধসে পড়েছে। পরে লোকজন এসে আমার দুই ছেলের মরদেহ উদ্ধার করে।
নুরজাহান বেগম বলেন, আমার লিটন বছর দুয়েক আগে বিয়ে করেছে। তার স্ত্রী গর্ভবতী। সন্তানকে দেখার আগেই ছেলেটা চলে গেল।
বিজ্ঞাপন