গত প্রায় ১৫ দিনের দাবদাহের ফলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উত্তরের জেলা দিনাজপুর। তীব্র গরমের ফলে সাধারণ মানুষ ছাড়াও বিভিন্ন পশু-পাখি ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। মৃদু দাবদাহের কারণে ক্ষেতে হাল-চাষ দিতে পারছেন না কৃষক। একদিকে দিনাজপুরে দাবদাহ বেড়েছে, অন্যদিকে বৃষ্টির দেখা নেই।
আর এই অনাবৃষ্টি থেকে বাঁচতে বৃষ্টির আশায় একসঙ্গে দিনাজপুরে ইসতিসকার নামাজ আদায় করেছেন হাজারো ধর্মপ্রাণ মুসলিম।
দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার সেতাবগঞ্জ পৌর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৮টায় এই নামাজের আয়োজন করা হয়। নামাজ প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা সময় ধরে চলে।
বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি বোচাগঞ্জ উপজেলা শাখার উদ্যোগে এই নামাজের আয়োজন করা হয়। নামাজে ইমামতি করেন সেতাবগঞ্জ সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মাওলানা আবু তাহের সিদ্দিকী। নামাজে একসঙ্গে ১২শ মানুষ অংশ নিয়েছিল বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন।
নামাজে অংশ নেন সেতাবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. আসলাম, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি বোচাগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি আব্দুল জব্বার ও সাধারণ সম্পাদক হাফেজ মওলানা আব্দুল ওয়াহেদ শাহ-সহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
নামাজে অংশ নেয়া ৮০ বছর বয়সী বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, আমার জীবনে আমি বহুবার বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়েছি। কিন্তু গত কয়েক বছর এই নামাজের আয়োজন করার প্রয়োজন হয়নি। এ বছর একেবারে অনাবৃষ্টি দেখা দিয়েছে। তাই ইমাম সমিতি এই নামাজের আয়োজন করেছে। আমিও এই নামাজে অংশগ্রহণ করেছি।
ইসতিসকার নামাজ শুরুর পূর্বে মাওলানা আবু তাহের সিদ্দিকী বলেন, মানুষের সম্পদ নিয়ে ফেরত না দেওয়া, সুদ, ঘুষ, দুর্নীতি, অনাচার, অবিচার এবং সামাজিক অনিয়ম বেড়ে গেলে আল্লাহ পৃথিবীতে অনাবৃষ্টি ও অতিবৃষ্টি দিয়ে থাকেন। প্রিয় নবীর আমলেও বৃষ্টির জন্য নামাজ আদায় করা হয়েছিল।
নামাজের পর দুই বার খুতবা এবং দাঁড়িয়ে হাত উল্টো করে ধরে মোনাজাত করা হয়।
এদিকে, দিনাজপুর আঞ্চলকি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেদ্রের ভারপ্রাপ্ত র্কমর্কতা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, দিনাজপুরে গত ৩ জুন বৃষ্টি হয়েছে। তারপর হক ১৫ জুন বিকেল ও রাতে দিনাজপুরে বৃষ্টি হয়েছে। যার পরিমাণ এক দশমিক ৬ মিলিমিটার। গতকাল শুক্রবার দিনাজপুরে তাপমাত্র ছিল ৩৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ শনিবার ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করছে। আকাশে মেঘের ভেলা ভেসে বেড়ালেও বৃষ্টির দেখা মিলছে না। এ জন্য আরও তিন দিন অপেক্ষা করতে হবে।
বিজ্ঞাপন