ঈশ্বরদীতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী পালন; বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও নগর কীর্তন » Itihas24.com
ঈশ্বরদী১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
ঈশ্বরদীর সবশেষ নিউজ । ইতিহাস টুয়েন্টিফোর

ঈশ্বরদীতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী পালন; বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও নগর কীর্তন

অপুর্ব চৌধুরী, ঈশ্বরদী
আগস্ট ১৯, ২০২২ ৪:০৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে দুষ্টের দমন, শিষ্টের পালন এবং ধর্ম রক্ষার লক্ষ্যে মহাবতার ভগবান রূপে জন্মগ্রহণ করেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ। অর্ধরাত্রিকাল সময় রোহিণী নক্ষত্র উঠলো। সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃতি মাতা তাঁর ভাণ্ডার উন্মোচন করে দিলেন।
চতুর্দিকে এক দিব্যজোতি দেখা গেলো। বনের পশু, পক্ষী, বৃক্ষ প্রত্যেকেই নিজ নিজ আনন্দে উদ্ভাসিত হলো। নদী, সাগরে জলতরঙ্গের জোয়ার উঠলো। চতুর্দিকে কেবল আনন্দ। স্বর্গের দেবতারা স্তব করতে লাগলেন, আনন্দ শঙ্খধ্বনি বাজাতে শুরু করলেন এবং পুষ্পবৃষ্টি করতে লাগলেন। এই শুভ মুহূর্তে বসুদেব চর্তুভূজ, শঙ্খ-চক্র-গদা-পদ্মধারী সুন্দর আকৃতি ও তেজঃপুঞ্জ কলেবর সেই নবজাতককে দেখতে লাগলেন। ভগবান তাঁর পুত্ররূপ নিয়ে জন্ম নিয়েছেন।

সঙ্গে সঙ্গে তিনি ও দেবকী ভগবানের স্তব করতে আরম্ভ করলেন। ঠিক সেই মুহূর্তে বসুদেব ভগবানের আদেশ অনুসারে পুত্রকে সঙ্গে নিয়ে কংসের কারাগার থেকে বাইরে এলেন। একে একে বৃহৎ লৌহ কপাট সব খুলে গেল।

ঠিক তখনই যশোদার গৃহে যোগমায়া জন্ম নিলেন। প্রচণ্ড বজ্রবিদ্যুৎপূর্ণ রাতে অনন্তদেব সহস্র ফনা বিস্তার করে বৃষ্টির হাত থেকে নিস্তারের জন্য বসুদেবের পিছু নিলেন। মথুরাবাসী এবং ব্রজবাসীদের অজান্তে নিশুতি রাতের সমস্ত ঘটনার সাক্ষী রইলেন শুধুমাত্র দেবতারা।

এদিকে নন্দের পুত্র জন্মগ্রহণ করার পর পরমানন্দে নতুন বস্ত্র ধারণ ও তিলক লেপে ব্রাহ্মণকে ডেকে পুত্রের জাত কর্ম করালেন। ব্রজবাসীরা মহানন্দে নন্দ উৎসব করতে লাগলেন। ব্রজের গোপরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেলেন। কৃষ্ণের জন্ম সংবাদে আকাশ-বাতাস, জল, পশু, পক্ষী, বাগানের পুষ্প সকলেই আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠলো। ব্রজবাসীর ঘরে আনন্দের প্লাবন।

ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব তিথি উপলক্ষ্যে শুক্রবার (১৯ আগষ্ট) ঈশ্বরদীতে হিন্দু সম্প্রদায়ের দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য জন্মাষ্টমী উৎসব পালিত হচ্ছে। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, ঈশ্বরদী শাখার উদ্যোগে বেলা ১১টায় শহরের কর্মকারপাড়া মাতৃ মন্দির হতে শুরু হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা।

এর আগে মাতৃ মন্দিরে জন্মাষ্টমীর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া (পাবনা-৪) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্জ্ব নুরুজ্জামান বিশ্বাস। এরপর তিনি মঙ্গল শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন পৌর মেয়র ইছাহক আলী মালিথা, ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার, পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুনিল চক্রবর্তি, সহ-সভাপতি উমা আগারওয়াল, সম্পাদক গণেশ সরকার, যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক মিলন কর্মকার, হিন্দু মহাজোটের পাবনা জেলা সমন্বয়ক গোপাল অধিকারী, ঈশ্বরদী হিন্দু মহাজোটের সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল রায়, পৌর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রশান্ত কুন্ডু, সাধারণ সম্পাদক তাপস সাহা।

আরো উপস্থিত ছিলেন রঞ্জিত রায় (বেল্টু), মাধব চন্দ্র পাল, উত্তম বরাসিয়া, লছমন রায়, স্কুলপাড়া বারোয়ারী পূজা কমিটির অমরেশ পাল, স্বপন রায়, প্রবীন বিশ্বাস, মানিক চন্দ্র সাহা, অপুর্ব চৌধুরী, বিশ্বজিৎ সরকার, সুমন কুমার সরকার, বিমল সাহা,  রতন সাহা, খোকন সাহা, সোনা কর্মকার, এ্যাডভোকেট দেবদাস রায়, ছাত্র মহাজোটের সভাপতি সুমন দাসসহ ঈশ্বরদীর বিভিন্ন পর্যায়ের ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিকবৃন্দ।

জয় শ্রীকৃষ্ণ শ্লোগানে শোভাযাত্রাটি শহরের ১ নং গেট হয়ে ফকিরের বটতলা থেকে কেন্দ্রীয় ঈদগাহ রোড হয়ে মালিথা মোড় দিয়ে ঠাকুরবাড়ি মন্দির প্রাঙ্গনে শেষ হয়। শোভাযাত্রা শেষে ঠাকুরবাড়ি মন্দিরে উপস্থিত ভক্তবৃন্দ নগর কীর্তন করেন এবং পরে ভক্তদের প্রসাদ বিতরণ করা হয়। শোভাযাত্রায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে নারী ও পুরুষ ভক্তরা অংশগ্রহন করে।

author avatar
SK Mohoshin

বিজ্ঞাপন

BONOLOTA IT POS ads