চুয়াডাঙ্গার দর্শনা স্টেশনে থেকে ট্রেনে চড়ে ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংসন স্টেশনে চলে আসা ৯ বছর বয়সী এক শিশুকে তার পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। রবিবার (৭ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টার দিকে শিশুটিকে তার বাবার কাছে ফিরিয়ে দেয় ঈশ্বরদী রেলওয়ে পুলিশ। এসময় বাবা-ছেলে আবেগে আপ্লুত হয়ে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেন।
পুলিশ জানায় ছেলের নাম ফাহিম হোসেন (৯)। সে তার ফুফুর বাড়ি দর্শনা রেলকলোনীতে থাকে এবং কাস্টম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেনীতে পড়াশুনা করে।
ঈশ্বরদী জংসন স্টেশনের পার্সেল সহকারি আরিফুর রহমান আরিফ বলেন, খুলনা থেকে চিলাহাটিগামী রকেট মেইল ট্রেন রবিবার বিকাল সাড়ে ৪টা দিকে ঈশ্বরদী জংসন স্টেশনে যাত্রাবিরতি দেয়। এসময় কয়েকজন যাত্রী একটি শিশুকে আমার কাছে এনে বলেন, সে দর্শনা থেকে ট্রেনে উঠেছে। কোথায় যাবে বলতে পারছে না। একেক সময় একেক কথা বলছে। তার শরীরে স্কুল ড্রেস রয়েছে। শিশুটিকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় সে দর্শনা থেকে ট্রেনে উঠেছে। দর্শনার কাস্টম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে। পরে অনলাইনে সার্চ দিয়ে ওই স্কুলের ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করি। প্রধান শিক্ষক ওই শিশুর বাবা ও ফুফুর সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের এ বিষয়টি জানায়। পরে শিশুটির নিরাপত্তার জন্য তাকে রেলওয়ে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করি। রাত ১১টার দিকে শিশু ফাহিমের বাবা ইব্রাহিমসহ তার আত্মীয়স্বজনরা রেল থানায় আসে। ঈশ্বরদী রেল থানার ওসি হাবিবুর রহমান শিশু ফাহিমকে বাবার হাতে তুলে দেন। এসময় এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
ফাহিমের বাবা ইব্রাহিম হোসেন বলেন, আমাদের বাড়ি ঝিনাইদহ জেলার রেলবাজার এলাকায়। ফাহিম দর্শনা তার ফুফু ফাতেমা খাতুনের বাড়িতে থেকে পড়াশুনা করে। রবিবার সকালে আমি দর্শনা এসে ফাহিমকে কাস্টম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রেখে আসি। পরে সে স্কুল থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়। তাকে বহু জায়গা খোঁজাখুজি করি। বিকালে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোবাইল ফোনে ফাহিমের ফুফুকে জানায় সে ঈশ^রদী স্টেশনে আছে। ছেলেকে পেয়ে খুবই ভালো লাগছে। ছেলে আমাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেছে। আমিও নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারিনি।
ঈশ্বরদী রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান বলেন, খুলনা থেকে চিলাহাটিগামী রকেট মেইল ট্রেন ঈশ^রদী জংসন স্টেশনে এলে কিছু যাত্রী শিশু ফাহিমকে জংসন স্টেশনের পার্সেল সহকারি আরিফুর রহমান আরিফের কাছে নিয়ে আসে। পরবর্তীতে তিনি ফাহিমের স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। রাত ১১টার পর ফাহিমকে তার বাবাসহ স্বজনদের হাতে তুলে দেয়া হয়
বিজ্ঞাপন