ঈশ্বরদীতে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে পুলিশ-সাংবাদিকসহ ১০জন আহত হয়েছে। ৪ আগষ্ট (রবিবার) দুপুরে পৌর শহরের পশ্চিমটেংরী রেনেসাঁ ক্লাব মোড় ও ঈশ্বরদী-পাবনা মহাসড়কের দাশুড়িয়া ট্রাফিক মোড় এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলির শব্দ শোনা যায়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার দুপুর ১২টার দিকে দাশুড়িয়া ট্রাফিক মোড় এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল বের করে বৈষম্য বিরোধী কোটা আন্দোলনের ছাত্ররা। এর আগেই দাশুড়িয়া ট্রাফিক মোড় এলাকায় অবস্থান নেন স্থানীয় যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ছাত্ররা মিছিল নিয়ে দাশুড়িয়া ট্রাফিক মোড়ে এলে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একে অপরকে লক্ষ্য করে টিল ছুড়ে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে। পরে দুপুর ২টার দিকে দাশুড়িয়া বাজার এলাকায় আরেক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় মাই টিভি প্রতিনিধি আলিফ হোসেন ও মোহনা টিভির প্রতিনিধি হুজ্জাতুল হীরাসহ ৭ জন আহত হয়। অপরদিকে, ঈশ্বরদী শহরের বাসটার্মিনালে দুপুর ১২টায় শহীদ মিনার চত্বরে গণ জমায়েতের ডাক দেয় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা। রবিবার সকাল ১০ পর থেকেই বাসটার্মিনালে শহীদ মিনার চত্বর এলাকা দখল নেয় ছাত্রলীগ- যুবলীগ। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ছাত্র আন্দোলনকারীরা সাঁড়া মাড়োয়ারি স্কুল ও কলেজ থেকে শহীদ মিনার চত্বরে আসার পথে ওভারব্রীজ মোড়ে পুলিশ মিছিলকারীদের আটকে দেয়। এসময় ছাত্ররা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুঁড়ে মারলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে পুলিশের এস আই নয়নসহ ৩ জন আহত হয়। পরে আন্দোলনরত ছাত্ররা ওভার ব্রীজ এলাকায় ঈশ্বরদী-রাজশাহী আঞ্চলিক সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে এবং সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়।
মোহনা টিভির প্রতিনিধি হুজ্জাতুল ইসলাম হীরা বলেন, দাশুড়িয়া ট্রাফিক মোড় এলাকায় ছাত্রলীগের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ছবি ও ফুটেজ সংগ্রহের সময় মাই টিভির সাংবাদিক আলিফ ও আমাকে বেধড়ক মারধর করে ক্যামেরা ভাংচুর করে হামলাকারীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ক ইব্রাহিম হোসেন বলেন, সারাদেশের মতো ঈশ্বরদীতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা ঈশ্বরদী শহীদ মিনারে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ-সমাবেশের ঘোষণা দেয়া হয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাঁড়ামাড়োয়ারি স্কুল এ্যান্ড কলেজ থেকে শহীদ মিনারে যাওয়ার পথে ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীরা বোমা ফাটিয়ে পরিবেশ অস্থিতিশীল করে তোলে। এসময় পুলিশ ঘটনাস্থলে ছাত্রদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল ছুড়ে।
ঈশ্বরদীউপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার শফিকুল ইসলাম শামীম জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় বেশ কয়েকজন এখানে চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছে। আরো কয়েকজন আসছে। এদের কারো মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত লেগেছে।
ঈশ^রদী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত কর্মকর্তা) এবিএম মনিরুল ইসলাম জানান, বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
বিজ্ঞাপন