মহামারি করোনা ভাইরাসের ১ম ও ২য় ঢেউ সামাল দিলেও ৩য় ঢেউ মোকাবেলায় হিমসিম খেতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। ১ম ধাপ থেকে বন্ধ করা হয়েছিলে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তারপর সময়ের সাথে করোনার উর্ধগতির কারনে দফায় দফায় বাড়ানো হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি।
একটানা প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকায় ঈশ্বরদীর অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে তৈরী হয়েছে ভুতুড়ে পরিবেশ। বিশেষ করে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল গুলোর অবস্থা জরাজীর্ণ।
অফিসের কাজকর্ম ও শিক্ষার্থীদের এ্যাসাইনমেন্ট নেওয়া ছাড়া তেমন কোনো কাজ নেই প্রতিষ্ঠানগুলোর। করোনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির সুযোগে জায়গা দখল করেছে মাদকসেবী ও জুয়ারীরা।
ঈশ্বরদীর সাঁড়া, পাকশী, সাহাপুর, লক্ষীকুন্ডা, সলিমপুর, দাশুড়িয়া, মুলাডুলির অধিকাংশ বিদ্যালয়ের আশপাশের মানুষ জানান, স্কুলগুলো বন্ধ থাকায় স্থানীয় মাদক সেবী ও জুয়ারীরা সন্ধ্যাকালীন সময়ে স্কুলের বারান্দা. ছাদে, পরিত্যাক্ত রুম ও স্কুল মাঠে বসে মাদক সেবন ও জুয়া খেলার আসর। তারা বলেন, এধরনের সমস্যার কথা আমরা প্রশাসনকে অবহিত করলেও আমাদের কথা প্রশাসন তেমন গুরুত্ব না দিলেও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট কেউ অবহিত করলে তার চেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে এবং দ্রæত ব্যবস্থা নিতো।
মাদকের সহজ লভ্যতা ও সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায়, প্রতিষ্ঠান গুলোর পরিচালনা পরিষদের তাদরকি না থাকায় এবং অবকাঠামোগত সমস্যার কারনে নিয়মিত মাদক সেবন ও জুয়ার আসর বসে বলে মনে করেন সুশিল সমাজের প্রতিনিধিরা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ঈশ্বরদী উপজেলা শাখার সাধারন সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান রবি বলেন, করোনায় দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোর আশেপাশে মাদক ও জুয়া খেলার ঘটনা ঘটতে পারে। বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত সমস্যা এর মুল কারন হতে পারে বলে মনে করেন তিনি। অনেক বিদ্যালয়ের প্রাচীর নেই। আর সন্ধ্যাকালীন সময়ে তো শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে থাকে না। তাই এ বিষয়ে তারা অনেকেই অবগত থাকেন না। বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সদস্যদের একটু তৎপর হওয়ার অনুরোধ করেন তিনি।
লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান শরীফ বলেন, আমার ইউনিয়নের কোনো শিক্ষক বা পরিচালনা পরিষদ এমন সমস্যার কথা আমাকে অবহিত করেন নি। তবে কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে তা দ্রæত সমাধান করা হবে।
তবে এ বিষয়ে ছাড় না দিতে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নের উল্লেখ করে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সেলিম আকতার বলেন, অবকাঠামো সমস্যা হোক আর পরিচালনা পরিষদের গাফিলতি হোক মাদকের বিষয়ে কোনো ছাড় নয়। বিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় মাদক সেবন কোনভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। এসময় প্রতিবেদকের কাছে তিনি বিদ্যালয় গুলোর নাম জানতে চান এবং এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের অবহিত করার পাশাপাশি প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে সমস্যা সমাধান করা হবে বলে জানান তিনি।