এই প্রথম ট্রেন চালকেরা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) কামরায় বসে ট্রেন চালাচ্ছেন। এতদিন শুধুমাত্র শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) বগি নিয়ে নির্ধারিত গন্তব্যে চলাচল করেছেন তারা। এখন নিজেরা এসি কামরায় বসে স্বস্তিতে ট্রেন চালাচ্ছেন। গত ৩১ মার্চ থেকে ৩ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত চারটি ইঞ্জিন রাজশাহী ও ঈশ্বরদী রুটে মধ্যে পরীক্ষামূলক চালানো হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা ৪০টি ইঞ্জিন বাংলাদেশ পশ্চিম রেলে যুক্ত হচ্ছে। এর মধ্যে পাঁচটি ঈশ্বরদী লোকশেডে এসে পৌঁছেছে। বৃহস্পতিবার থেকে কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস ট্রেনের সঙ্গে যুক্ত করে চারটি ইঞ্জিন পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হচ্ছে। শুধু কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস ট্রেনের বগির সঙ্গে লাগিয়ে পরীক্ষামূলক চলাচলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ, দিনে ঈশ্বরদী ও রাজশাহীর মধ্যে চলাচলকারী একটি ট্রেনই রয়েছে। ইঞ্জিনগুলো চালানোর সময় বাইরের বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি সঙ্গে রয়েছেন। চালানোর সময় যেসব যান্ত্রিক সমস্যা পাওয়া যাবে, পরে সেগুলো ঠিক করে আনুষ্ঠানিকভাবে এগুলো চালানো হবে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা ইঞ্জিন প্রথম চালান তৌহিদুল ইসলাম। তিনি লোকোমোটিভ মাস্টার হিসেবে পশ্চিম রেলে কর্মরত আছেন। তৌহিদুল ইসলাম রবিবার বলেন, এই ইঞ্জিনের সর্বোচ্চ গতিসীমা ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার। কিন্তু তাদের চালানোর জন্য আপাতত সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেধে দেওয়া হয়েছে। আমি ৯৩ কিলোমিটার গতিতে চালিয়েছি। তিনি জানান, ইঞ্জিনের আগে-পিছে ক্যামেরা ও জিপিএসও লাগানো রয়েছে। এতে ট্রেনের অবস্থান অন্ধকারেও বোঝা যাবে। গরমে লোহা গরম হয়ে যায়। তখন গরম লাগে বেশি। আবার শীতে লোহা ঠান্ডা হয় বেশি। তখন ঠান্ডা লাগে। সব সময় শীত-গরমের কষ্টে ভুগতে হয়। যাত্রীরা এসিতে যেতে পারলেও চালকদের কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে।চালকদের জন্য এই প্রথম এসি কামরার ব্যবস্থা করা হয়েছে।এতে স্বস্তিতে চালকরা ট্রেন চালাতে পারবে।
পাকশী রেলওয়ে বিভাগীয় সহকারী যান্ত্রিক প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জোয়াদ্দার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা লোকোমোটিভ দ্রুত গতি তুলতে সক্ষম। এটি রক্ষানাবেক্ষণের সময় ও ব্যয় কম হবে। এছাড়াও লোকামোটিভ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় চালকরা স্বস্তিতে ট্রেন চালাতে পারবেন। ইতিমধ্যে পাঁচটি লোকামোটিভ ঈশ্বরদী লোকোসেডে এসে পৌঁছেছে। চারটির পরীক্ষামূলক চলাচল শুরু হয়েছে। এছাড়াও আরো কয়েকটি লোকোমোটিভ দ্রুতই সংযুক্ত হবে সেগুলো পরীক্ষামূলক চালানোর পর দূরের রুটে লোকোমোটিভগুলো চালানো হবে।
পাকশী রেলওয়ে বিভাগীয় সহকারী পরিবহণ কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলাম জানান, পশ্চিমাঞ্চল রেলে নতুন লোকোমোটিভ (সর্বোচ্চ গতির ইঞ্জিন) যুক্ত হওয়ায় যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের পাশাপাশি পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলও বাড়বে। এতে সরকারের রাজস্ব আয় বেড়ে যাবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার বলেন, দেশে তিন হাজার ২০০ হর্সপাওয়ারের ইঞ্জিন ছিল। এবার তিন হাজার ৩০০ হর্সপাওয়ারের অত্যাধুনিক ৪০টি ইঞ্জিন পর্যায়ক্রমে পশ্চিম রেলে যুক্ত হবে। ইঞ্জিনে এসি সুবিধা থাকায় চালকরা এসব ট্রেন স্বস্তিতে চালাতে পারবেন।
বিজ্ঞাপন