রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি ইউরেনিয়াম বাংলাদেশের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেছে রাশিয়া। এর মধ্য দিয়ে পরমাণু স্থাপনার মর্যাদা পেলো রূপপুর প্রকল্প। আর ৩৩তম পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারকারীর তালিকায় যুক্ত হলো বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) পৌনে ৪টার দিকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমানের কাছে ইউরেনিয়াম হস্তান্তর করে রাশিয়া। এর আগে, পারমাণবিক জ্বালানি হস্তান্তরে আয়োজিত গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এছাড়া, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসিও ভার্চুয়ালি যোগ দেন।
ভ্লাদিমির পুতিন তার বক্তব্যে জানান, রাশিয়ার পরীক্ষিত বন্ধু বাংলাদেশ। সমতা ও সম্মান এই সম্পর্কের ভিত্তি। শিডিউল অনুযায়ীই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ চলছে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট ২০২৪ এবং দ্বিতীয় ইউনিট ২০২৬ সালে উৎপাদনে আসবে। কেবল নির্মাণ নয়, রূপপুর প্রকল্পের পুরো লাইফটাইমে কারিগরি ও প্রযুক্তি সহায়তায় পাশে থাকবে রাশিয়া।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ শেষ করছেন বলেও এ সময় বক্তব্যে উল্লেখ করেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বব্যাপী পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার চায় বাংলাদেশ। আমরা শান্তিরক্ষায় পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করবো। বাংলাদেশে আমরা পরমাণবিক শক্তি নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন করেছি। সব ধরনের নিরাপত্তা বিধান করে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার পথে আরেকটা বড় পদক্ষেপ।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বলেছেন, শতভাগ স্বচ্ছতার সাথে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের কাজ শেষ করেছি।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে এসে পৌঁছায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জ্বালানির প্রথম চালান। পরদিন ২৯ সেপ্টেম্বর বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় প্রকল্প এলাকায় নেয়া হয় জ্বালানি। ইউরেনিয়ামের দ্বিতীয় চালানটিও দেশে পৌঁছেছে। আজ দুপুর ১২টা মিনিটের দিকে এই জ্বালানি ঢাকায় পৌঁছে।
রাশিয়ার সহযোগিতায় নির্মাণ করা হচ্ছে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। এটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার। প্রকল্পটির ৯০ ভাগ অর্থায়ন হচ্ছে রাশিয়ার ঋণে। ১০ ভাগের জোগান দিচ্ছে সরকার। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি হলে এর দুইটি ইউনিট থেকে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে।
বিজ্ঞাপন