বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অফিসার হতে চাইলে করণীয় » Itihas24.com
ঈশ্বরদী২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
ঈশ্বরদীর সবশেষ নিউজ । ইতিহাস টুয়েন্টিফোর
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অফিসার হতে চাইলে করণীয়

শান্ত ইসলাম
ডিসেম্বর ২৬, ২০২৩ ১০:৪৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অফিসার দুইভাবে হওয়া যায়।বর্তমানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করলে প্রথম যে পদবী আপনি পাবেন, তা হলো লেফটেন্যান্ট। তবে কমিশন পাবার ব্যাপারটি অত্যন্ত কঠিন। একজন আর্মি অফিসার হবার জন্য ইন্টার সার্ভিসেস সিলেকশন বোর্ডের (ISSB) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে (BMA) প্রায় ৩ বছর ট্রেনিং গ্রহণের পর কমিশন লাভের মাধ্যমে আপনার পক্ষে সম্মানজনক লেফটেন্যান্ট র‍্যাঙ্ক অর্জন করা সম্ভব।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অফিসার  হওয়ার উপায় সমূহঃ

১। BMA নিয়মিত কমিশন

২। ডাইরেক্ট শর্ট সার্ভিস কমিশন

BMA নিয়মিত কমিশন- BMA REGULAR COMISSION

Requirements

একজন কমিশন্ড অফিসারের জন্য আবেদন করার জন্য আপনাকে অবশ্যই হতে হবে:

16 বছর 6 মাস – 21 বছর বয়সী 01 জানুয়ারী বা 01 জুলাই প্রশিক্ষণের জন্য সামরিক একাডেমিতে যোগদানের তারিখ এবং বছরে। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে চাকরিরত সৈনিকদের জন্য 18-23 বছর।
জন্মসূত্রে একজন বাংলাদেশী নাগরিক।
অবিবাহিত।
বিএমএ লং কোর্সের জন্য একটি জিপিএ-৫.০ এবং অন্যটি কমপক্ষে জিপিএ ৪.৫ সহ এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া। ইংরেজি মাধ্যমের প্রার্থীদের জন্য – ‘O’ স্তরের 06টি বিষয়ের মধ্যে কমপক্ষে 03xA এবং 3xB গ্রেড এবং ‘A’ স্তরের 02টি বিষয়ের মধ্যে 02xB গ্রেড বা কমপক্ষে 02xA; 3xB; ‘ও’ লেভেলের 06টি বিষয়ের মধ্যে 1xC গ্রেড এবং ‘A’ লেভেলের 02টি বিষয়ের মধ্যে 01xA এবং 01xB গ্রেড পেতে হবে।
নিম্নে বর্ণিত একটি আদর্শ শারীরিক সুস্থতা:

পুরুষ
উচ্চতা: 1.63 মিটার / 5 ফুট 4 ইঞ্চি
ওজন: 54 কেজি (120 পাউন্ড)
বুক: 0.76 মিটার (30 ইঞ্চি) স্বাভাবিক, 0.81 মিটার (32 ইঞ্চি) প্রসারিত

মহিলা
উচ্চতা: 1.57 মিটার / 5 ফুট 2 ইঞ্চি
ওজন: 47 কেজি (104 পাউন্ড)
বুক: 0.71 মিটার (28 ইঞ্চি) স্বাভাবিক, 0.76 মিটার (30 ইঞ্চি) প্রসারিত

DIRECT SHORT SERVICE COMMISSION

সেনাবাহিনীর পেশাদার শাখা () বেসামরিক ডিগ্রিপ্রাপ্ত নেতাদের সরাসরি সংক্ষিপ্ত প্রাপ্তির একটি উপায় প্রদান করে। তাদের কর্মজীবনের ক্ষেত্রে সার্ভিস কমিশন। বিশেষভাবে ডিজাইন করা কোর্সে সামরিক ইতিহাস, সেনা নেতৃত্ব, সামরিক রীতিনীতি এবং ক্যারিয়ার ভিত্তিক ক্লাসের নির্দেশনা রয়েছে।

যে ব্যক্তিরা সরাসরি কমিশন লাভ করেন তারা তাদের কর্মজীবন শাখা দ্বারা নির্ধারিত Rank পাবেন।

আপনার দক্ষতার ক্ষেত্রটি আরও একটু অন্বেষণ করুন এবং দেখুন সেনাবাহিনী কী অফার করে:

আর্মি মেডিক্যাল কর্পস
আর্মি মেডিকেল কর্পস (AMC) বাংলাদেশের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাগুলির মধ্যে একটি। আর্মি মেডিক্যাল কোরের কমিশন্ড অফিসাররা ওষুধের অগ্রগতিতে আছেন এবং আমাদের জাতি এবং আমাদের সৈন্যদের সেবা করে সন্তুষ্টি অর্জন করেন।

আর্মি ডেন্টাল কর্পস
আর্মি ডেন্টাল কর্পস (ADC) বাংলাদেশের আরেকটি উন্নত স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা। আর্মি ডেন্টাল কর্পসে কমিশনড অফিসার এবং উচ্চ যোগ্য সৈনিকরা আমাদের জাতি এবং আমাদের সৈন্যদের সর্বোচ্চ সন্তুষ্টির জন্য তাদের পরিষেবা প্রদান করে।

আর্মি এডুকেশন কর্পস (বিচারক অ্যাডভোকেট জেনারেলস শাখা)
সেনাবাহিনীর জজ অ্যাডভোকেট জেনারেলের (জেএজি) কর্পস প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল চাকরিরত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মীদের জন্য একটি মসৃণ বিচার ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য।

কর্পস অফ ইঞ্জিনিয়ার্স
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্পস অফ ইঞ্জিনিয়ার্স দেশে এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বিভিন্ন নির্মাণ প্রকল্পে নিয়োজিত রয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্পস অফ ইঞ্জিনিয়ার্স ১৯৯১ সাল থেকে অপারেশন কুয়েত পুনরগোথনে ডিমিনিং অপারেশনে অত্যন্ত সফলতার সাথে কাজ করছে।

সিগন্যাল কর্পস
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্পস অব সিগন্যাল দেশে এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বিভিন্ন যোগাযোগের দায়িত্ব পালন করছে।

বৈদ্যুতিক এবং যান্ত্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পস
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পস বাড়িতে এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বিভিন্ন মেরামত ও পুনরুদ্ধারের দায়িত্ব পালন করছে।

আর্মি এডুকেশন কর্পস
আর্মি এডুকেশন কর্পস প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মরত সদস্য ও ক্যাডেটদের শিক্ষাগত প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করার জন্য।

 

এক নজরে একজন আর্মি অফিসার

প্রথম র‍্যাঙ্ক: লেফটেন্যান্ট
বিভাগ: সামরিক
প্রতিষ্ঠানের ধরন: সরকারি
ক্যারিয়ারের ধরন: ফুল-টাইম
এন্ট্রি লেভেলে সম্ভাব্য অভিজ্ঞতা সীমা: প্রযোজ্য নয়
এন্ট্রি লেভেলে সম্ভাব্য গড় বেতন: ৳২৩,৫০০ (৮ম পে স্কেল অনুযায়ী)
এন্ট্রি লেভেলে সম্ভাব্য বয়স: ১৭ – ২৩ বছর
মূল স্কিল: শৃঙ্খলা, কঠোর পরিশ্রম করার সামর্থ্য
বিশেষ স্কিল: নেতৃত্বদানের দক্ষতা, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা

একজন আর্মি অফিসার কোথায় কাজ করেন?

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে।

একজন আর্মি অফিসারের কাজ কী?

একজন লেফটেন্যান্টের কাজ বিএমএতে থাকাকালীন পাওয়া শিক্ষা ও তার কোরের উপরে নির্ভর করে। যেমন –

  • আর্টিলারি
  • ইনফ্যান্ট্রি
  • আরমার্ড (ট্যাঙ্ক)
  • অর্ডন্যান্স (সমরাস্ত্র)
  • সিগন্যালস
  • শিক্ষা
  • ইঞ্জিনিয়ারিং
  • ইএমই (Electrical and Mechanical Engineers – EME)
  • এএসসি (Army Services Corps – ASC)
  • এএমসি (Army Medical Corps – AMC) ও অন্যান্য

একজন আর্মি অফিসারের কী ধরনের দক্ষতা ও জ্ঞান থাকতে হয়?

  • উপস্থিত বুদ্ধি
  • আত্মবিশ্বাস
  • ইংরেজিতে দক্ষতা
  • নেতৃত্বগুণ

উল্লেখ্য যে, সেনাবাহিনীতে শারীরিক দক্ষতা, সুস্থতা ও সামর্থ্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আপনার শারীরিক সামর্থ্য ভালো না হলে প্রশিক্ষণের সময় টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাবে।

একজন আর্মি অফিসার হবার ধাপ কী কী?

  • প্রিলিমিনারী লিখিত পরীক্ষা
  • লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে ১৫-২০ মিনিটের একটি ছোট মৌখিক পরীক্ষা
  • মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে আইএসএসবির (ISSB) চূড়ান্ত পরীক্ষা
  • আইএসএসবির (ISSB) চূড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে চট্টগ্রামের ভাটিয়ারীতে প্রায় ৩ বছরের প্রশিক্ষণ

কষ্টসাধ্য ও দুঃসহ প্রশিক্ষণ সফলভাবে শেষ করতে পারলে ৩ বছরের মাথায় আপনি কমিশনপ্রাপ্ত হয়ে একজন লেফটেন্যান্ট হবার গৌরব অর্জন করতে পারবেন।

একজন আর্মি অফিসারের মাসিক আয় কেমন?

৮ম পে স্কেল অনুসারে একজন লেফটেন্যান্টের মূল বেতন ৳২৩,৫০০। তবে এর মধ্যে থেকেই আপনার আর্মি মেসে থাকার খরচ চালাতে হয়। শুধু মূল বেতন ছাড়াও একজন লেফটেন্যান্ট কাজ ও পোস্টিং সাপেক্ষে ভাতা পেয়ে থাকেন।

একজন আর্মি অফিসারের ক্যারিয়ার কেমন হতে পারে?

লেফটেন্যান্ট থেকে পরবর্তী পদবী ক্যাপ্টেন হবার জন্য ৩টি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। এক্ষেত্রে সময় লাগে প্রায় দুই থেকে আড়াই বছরের মতো। ক্যাপ্টেন থেকে মেজর পদে উন্নীত হতে সময় লাগে প্রায় ৩ বছরের মতো। এরপরের পদোন্নতিগুলোর নির্দিষ্ট কোন সময়কাল নেই। সেগুলো যোগ্যতা ও অবস্থাসাপেক্ষ হয়। পদগুলো হলো –

  • লেফটেন্যান্ট কর্নেল
  • কর্নেল
  • ব্রিগেডিয়ার জেনারেল
  • মেজর জেনারেল
  • লেফটেন্যান্ট জেনারেল
  • জেনারেল
  • ফিল্ড মার্শাল

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অফিসার হতে চাইলে করণীয়

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অফিসার হতে চাইলে করণীয়

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অফিসার হতে চাইলে করণীয়

উল্লেখ্য যে, ফিল্ড মার্শাল যেকোন সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ পদ হলেও আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত এ পদে কেউ নিয়োগ পাননি।

 

লেখক :  শান্ত ইসলাম (Follow me On Facebook)

শিক্ষার্থী , বাংলাদেশ আর্মি ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি

কাদিরাবাদ সেনানিবাস,নাটোর

author avatar
শান্ত ইসলাম জয়
শান্ত ইসলাম জয় একজন পেশাগত ওয়েব ডেভেলপার এবং পাশাপাশি ইতিহাস টুয়েন্টিফোর ডটকমে তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগে সংযুক্ত আছেন। তিনি বনলতা আইটি ওয়েবসাইট নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা

বিজ্ঞাপন

BONOLOTA IT POS ads