শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ » Itihas24.com
ঈশ্বরদী১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
ঈশ্বরদীর সবশেষ নিউজ । ইতিহাস টুয়েন্টিফোর
আজকের সর্বশেষ সবখবর

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ

রনজন কুমার
ডিসেম্বর ১৪, ২০২৩ ১২:৩২ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

বাঙালি জাতির ইতিহাসে বেদনাবিধুর দিন আজ (১৪ ডিসেম্বর), শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। এদিন বেদনাসিক্ত হৃদয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণ করে বাংলাদেশের মানুষ। পাক হানাদারদের বর্বরতায় মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে যে সূর্য সন্তানদের হারিয়েছিল দেশ। যারা শহীদ হয়েছেন তারা চিরদিন স্মরণীয় ও বরণীয় হয়ে থাকবে। তাদের শূন্যতা আজও অনুভূত হয়।

১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বরের হত্যাকাণ্ড ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে একটি বর্বরতম ঘটনা। সেদিন রাতের আঁধারে জাতির মেধাবী সন্তানদের বেছে বেছে হত্যা করেছিল পাক হানাদার বাহিনী। পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসররা পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞের পর ঢাকার মিরপুর, রায়েরবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে বুদ্ধিজীবীদের লাশ ফেলে রাখে।

যুদ্ধে পরাজয় নিশ্চিত জেনে বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করতে বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে তারা। বেছে বেছে অসংখ্য শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, আইনজীবী, শিল্পী, প্রকৌশলী, দার্শনিক ও রাজনৈতিক চিন্তাবিদসহ দেশের মেধাবী সন্তানদের নির্মমভাবে হত্যা ও গুম করে।

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে এ এন এম মুনীর চৌধুরী, ড. জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, আবদুল মুকতাদির, ড. জিসি দেব, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, আনোয়ার পাশা, এস এম রাশীদুল হাসান, ড. শাহাদাত আলী, ড. এম এ খায়ের, এ আর খান খাদিম, ড. এন এম ফয়জুল মাহী, ফজলুর রহমান খান, এ এন এম মুনীরুজ্জামান, ড. সিরাজুল হক খান, মো. সাদেক, শরাফত আলী, গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, অনুদ্বৈপায়ন ভট্টাচার্য ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মীর আবদুল কাইয়ুম, হবিবর রহমান, সুখরঞ্জন সমাদ্দার, ড. আবুল কালাম আজাদ।

সাংবাদিকদের মধ্যে ছিলেন সিরাজুদ্দীন হোসেন, শহীদুল্লাহ কায়সার, খোন্দকার আবু তালেব, নিজামুদ্দীন আহমদ, আ ন ম গোলাম মোস্তফা, শহীদ সাবের, শেখ আবদুল মান্নান (লাডু), সৈয়দ নজমুল হক, এম আখতার, আবুল বাসার, চিশতী হেলালুর রহমান, শিবসদন চক্রবর্তী ও সেলিনা পারভীন।

এছাড়া শিল্পী আলতাফ মাহমুদ, সাহিত্যিক পূর্ণেন্দু দস্তিদার, মেহেরুন্নেসা, দানবীর রণদাপ্রসাদ সাহাসহ আরও অনেককে নির্মমভাবে হত্যা করে পাকবাহিনী।

এই পরিকল্পিত নৃশংসতার উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশ যাতে আর কখনও মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে, সেটাই ছিল এ হত্যাযজ্ঞের মূল লক্ষ্য। হত্যার আগে তাদের ওপর চালানো হয়েছিল নির্মম নির্যাতন। বিজয় অর্জনের পর রায়েরবাজারের পরিত্যক্ত ইটখোলা, মিরপুরসহ বিভিন্ন বধ্যভূমিতে একে একে পাওয়া যায় হাত-পা-চোখ বাঁধা দেশের খ্যাতিমান বুদ্ধিজীবীদের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে জাতীয় কর্মসূচি

১৪ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। দিবসটিতে সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বেসরকারি টিভি চ্যানেল সরাসরি সম্প্রচার করবে।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর নেতৃত্বে শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং যুদ্ধাহত ও উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধারা এদিন সকাল ৭টা ২২ মিনিটে মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে এবং সকাল সাড়ে ৮টায় রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

এছাড়া সকাল সাড়ে ৮টা থেকে রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী পৃথক বাণী দিয়েছেন। এছাড়া এদিন দেশের সব জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্য বেসরকারি টিভি চ্যানেল দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে সব মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও অন্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা করা হবে।

এ দিবসের পবিত্রতা রক্ষায় শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ এলাকায় মাইক বা লাউডস্পিকার ব্যবহার না করার জন্য সর্বসাধারণের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

এদিন দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনও পৃথক কর্মসূচি পালন করবে।

বিজ্ঞাপন

BONOLOTA IT POS ads