বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন ঘিরে উত্তাল এফডিসি। গত শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) ছিল শিল্পী সমিতির নির্বাচন। এদিন এফডিসিতে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি চলচ্চিত্রের ১৭টি সংগঠনের সদস্যদের।
এ বিষয়টিকে অপমানজনক দাবি করে তিন দফা দাবিতে লাগাতার কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে ১৭ সংগঠন। চলছে তাদের আন্দোলন। আজ সকাল ১০টায় এফডিসির প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করেন ১৭ সংগঠনের নেতারা।
সেখানে পরিচালক সমিতির মহাসচিব বলেন, ‘এই এমডি চলচ্চিত্রবান্ধব নয়। তিনি আমাদের চলচ্চিত্রের সবাইকে অপমান করেছেন। বারবার তার কাছে নানা ইস্যু নিয়ে গেলে তিনি বাজে ব্যবহার করে ফিরিয়ে দিয়েছেন। তিনি আমাদের কোনো কথাই কোনোদিন শুনেননি। আমরা এমন এমডি চাই না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আদেশ অমান্য করে তিনি আমাদের এফডিসিতে ঢুকতে দেননি। আমরা তার অপসারণ চাই। সে এখানে থাকলে আমরা কোনো কাজ করবো না। সে আমাদের গেটের বাইরে রেখেছে, এবার আমরা তাকে গেটের বাইরে পাঠাবো।’
পরিচালক নেতা এস এ হক অলিক বলেন, ‘আমরা এমন এমডি দিয়ে কী করবো? তিনি কতগুলো যন্ত্রপাতি এনে ফেলে রেখেছেন। তার একটা লোকও আমাদের কাজে আসে না। তিনি চলচ্চিত্রের মানুষদের অপমান করেছেন একটা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। তার উদ্দেশ্যটা কী আমরা জানতে চাই।
আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী-তথ্যমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেবো তার অপসারণ চেয়ে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ নিয়ে যাবো তার অপসারণ চেয়ে। এই এমডি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া এফডিসিকে ধ্বংস করছেন।’
পরিচালক নেতা বদিউল আলম খোকন বলেন, ‘প্রযোজকরা টাকা লগ্নি করে বলে আমরা পরিচালকরা সিনেমা বানাই। আর পরিচালকরা সিনেমা বানাই বলেই এফডিসি সচল থাকে। আপনি বেতন পান। আর সেই প্রযোজক-পরিচালকদের আপনি অপমান করেছেন। গেটের বাইরে সারাদিন বসিয়ে রেখেছেন।
তিনি মোটেও চলচ্চিত্রবান্ধব না। তার সব কাজ চলচ্চিত্রের বিরোধী। চলচ্চিত্রের কাউকে তিনি পাত্তা দেন না। বারবার তার সঙ্গে মিটিং করেছি শিল্পী সমিতির নির্বাচনে আমাদের প্রবেশ করা নিয়ে। তিনি কোনো কথাই শুনেননি।
সরকারের আদেশ থাকলেও তা মানেননি তিনি। খুব বাজে ব্যবহার করে আমাদের চ্যালেঞ্জ করেছেন- ‘যা পারেন করেন’ বলে। আমরা তার অপসারণ চাই। নির্বাচন প্রভাবিত করতেই তিনি এমনটা করেছেন। তার মতো অযোগ্য এমডির দরকার নেই আমাদের।’
প্রযোজক নেতা ইকবাল বলেন, ‘আমরা প্রযোজকরা সিনেমা বানিয়ে এফডিসি সচল রাখি। আর আপনি কার খুঁটির জোরে আমাদের অপমান করেন, চলচ্চিত্রের মানুষদের অপমান করেন। আমরা সেই খুঁটির খবর জানতে চাই। আপনি ৬-৭ বছর ধরে এখানে দায়িত্ব নিয়েছেন। এ সময়ে শুটিং স্পটের ভাড়া বেড়েছে। যন্ত্রপাতির ভাড়া বেড়েছে। এত টাকায় আমরা কিছুই নিতে পারি না। শুটিংয়ের জন্য একটি সূতা লাগলে সেটাও বাইরে থেকে আনতে হয়।
আপনি আমাদের জন্য এই কয়েক বছরে কিছুই করেননি। শুধু অপমান করেছেন। ৫০ বছরের ইতিহাস নষ্ট করেছেন। আমাদের মুরুব্বিদের অপমান করেছে ঢুকতে না দিয়ে। আমরা এর নিন্দা জানাই। আমরা আপনার অপসারণ চাই। আপনি যতদিন এখানে থাকবেন আমরা কাজ করবো না।’
প্রযোজক নেতা আলীমুল্লাহ খোকন বলেন, ‘এফডিসির ক্ষমতায় বসে আমাদের শোষণ করা ছাড়া আর কিছু করেননি। পানি না দিয়ে পানির বিল নিয়েছেন। বিদ্যুৎ না দিয়ে তার বিল নিয়েছেন। সবকিছুর ভাড়া ডাবল। তার ওপর আমাদের ঢুকতে দেননি। আমাদের মুরুব্বিদের বাইরে রেলগেটে বসিয়ে রেখেছেন। আমরা আপনাকে একমুহূর্ত এখানে দেখতে চাই না।’
বিজ্ঞাপন
