ট্রেন ভ্রমণের সময় ঈশ্বরদীর পাকশী রেলসেতুর রেলিংয়ের সঙ্গে ধাক্কা লেগে মাহবুব আদর নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। বুধবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
মাহবুব বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ ও হাজী মুহাম্মদ মহসিন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। তার বাড়ি জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার সদর ইউনিয়নে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নিহত শিক্ষার্থী মাহবুব আদরের চাচা ফরহাদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী।
মাহবুবের চাচা ফরহাদ বলেন, মাহবুব কুষ্টিয়ায় ঘুরতে গিয়েছিল। গতকাল রাতে সে ফেসবুকে ছবি আপলোড দিয়েছে দেখলাম। আজ সকালে শুনি সে মারা গেছে।
তিনি বলেন, ঢাকা থেকে কুষ্টিয়া যাওয়ার সময় পাকশী সেতুর ওখানে জানালা দিয়ে মাথা বের করছিল মাহবুব। তখন সেতুর রেলিংয়ের সঙ্গে ধাক্কা লেগে পড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। তার পরিবারের সদস্যরা সেখানে গেছে। সন্ধ্যার দিকে তাকে নিয়ে আসবে।
এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রব্বানী বলেন, ঘটনাটি আমরা শুনেছি। মরদেহ বর্তমানে পাকশী থানায় আছে। শোকাহত পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে ঢাবি প্রশাসন।
মহসিন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মাসুদুর রহমান বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। আমরা মাহবুবের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি।
মাহবুবের হঠাৎ চলে যাওয়ায় ভারাক্রান্ত হয়ে পড়েছেন তার সহপাঠীরা। তার হলের কক্ষসঙ্গী মো. রাহাত শিকদার বলেন, মাহবুব খুবই ভালো একজন ছেলে ছিল। সে সবসময় খুবই মিশুক, হাসিখুশি ও প্রাণবন্ত থাকতো। তার এভাবে হঠাৎ চলে যাওয়া মেনে নিতে পারছি না
ফেসবুক স্টোরিতে ট্রেনের ছাদে ছবি মাহবুবের
তার ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টের দৈনিক স্টোরিতে দেখা যায়, মাহবুব ট্রেনের ছাদে একজন অপরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে ছবি আপলোড করেন। এতে লিখেছেন, ‘কঠিন তবুও আনন্দঘন মাঝপথে জুটেছিল অপরিচিত সঙ্গী।
’ঈশ্বরদী রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার সুমি জানান, তার আগের শিফটের ডিউটিরত স্টেশন মাস্টার হার্ডিঞ্চ ব্রিজের নিরাপত্তারক্ষীদের থেকে জানতে পারেন, সেখানে একটি লাশ পাওয়া গেছে। এরপর তিনি পোড়াদহ রেলওয়ে থানাকে জানান। পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ এসে লাশ পোড়াদহ রেলওয়ে থানায় নিয়ে গেছে।
তার বন্ধুদের ধারণা, ট্রেনের ছাদে ভ্রমণের সময় পাকশী রেলওয়ে সেতুর রেলিংয়ের ধাক্কায় তার মৃত্যু হতে পারে।
জানা যায়, তিন সদস্যের পরিবারে সে তার পিতা মাতার একমাত্র সন্তান। তার পিতার নাম মো. হান্নান মিঠু। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় অত্যন্ত মনোযোগী এবং মেধাবী ছিলেন আদর। পড়েছেন জয়পুরহাট আর বি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে এবং ঢাকার মাইলস্টোন কলেজে। ২০১৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে মার্কেটিং ডিপার্টমেন্টে পড়ার সুযোগ হয় তার।
বিজ্ঞাপন