লালপুরে আ. লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ৯ » Itihas24.com
ঈশ্বরদী২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
ঈশ্বরদীর সবশেষ নিউজ । ইতিহাস টুয়েন্টিফোর
আজকের সর্বশেষ সবখবর

লালপুরে আ. লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ৯

নিজস্ব প্রতিবেদক
এপ্রিল ১৪, ২০২২ ৮:৫৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

লালপুরের করিমপুর হাটবাজারে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে পুলিশসহ ৯ জন আহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার রাতে উপজেলার চংধুপইল ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন আব্দুলপুর তদন্তকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। ওই হাটবাজারের ইজারাদার মো. আসলাম হোসেন সোহাগ বাদী হয়ে ১৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

আহতরা হলেন-রেজাউল করিম সমর্থিত পশ্চিম গোসাইপুর গ্রামের জলিলের ছেলে মো. জনি (২৫), সাধু মাস্টারের ছেলে হাসান (৪০), পূর্ব গোসাইপুর গ্রামের হুজুর আলীর ছেলে ইদ্রিস (৫০) ও ধনঞ্জয়পাড়া গ্রামের ইব্রাহিমের ছেলে জাহাঙ্গীর (৩৫)। আব্দুল্লাহ আল মামুন অরেঞ্জ সমর্থিত ধনঞ্জয়পাড়া গ্রামের তাইজুল ইসলামের ছেলে মিল্টন (৩০), বাদশার ছেলে জাকির হোসেন (৩৩), রমজানের ছেলে রাজু আহমেদ (২২) ও আহম্মেদের ছেলে মকবুল হোসেন (৪০)। তাঁদের মধ্যে আহত মিল্টন, জাকির ও রাজুকে প্রথমে করিমপুরের ল্যাব ওয়ান স্বাস্থ্য ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে তাঁদের লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়েছে।

লালপুর থানা, হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে সম্প্রতি উপজেলার চংধুপইল ইউনিয়নের করিমপুর হাটবাজার ইজারা পেয়েছেন ধনঞ্জয়পাড়ার মৃত বাদশার ছেলে মো. আসলাম হোসেন সোহাগ (৩০)। গত মঙ্গলবার ইজারাদারের নির্দেশে মাইকে প্রচারণার সময় সাবেক সাংসদ আবুল কালাম আজাদ সমর্থিত চংধুপইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিমের লোকজন মাইকের তার ছিঁড়ে দেয় ও ভ্যানচালককে চড়থাপ্পড় মারেন। এ ঘটনায় বর্তমান সাংসদ শহিদুল ইসলাম বকুল সমর্থিত গত নির্বাচনে ওই ইউনিয়নের পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন অরেঞ্জ মৌখিকভাবে আব্দুলপুর ফাঁড়িতে অভিযোগ করেন। এ সময় আব্দুলপুর পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক হীরেন্দ্রনাথ প্রামাণিক লালপুর থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ দিতে বলেন। পরে আসলাম হোসেন সোহাগ লিখিতভাবে অভিযোগ দেন।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় বিষয়টি জানার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীমা সুলতানা ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোনোয়ারুজ্জামানের নির্দেশক্রমে হীরেন্দ্রনাথ প্রামাণিক বিষয়টি মীমাংসার জন্য উভয় পক্ষকে তদন্তকেন্দ্রে ডাকেন। দুই পক্ষের পাঁচজন করে নিয়ে মীমাংসার জন্য তদন্তকেন্দ্রের অফিস কক্ষে বসেন। কিন্তু উভয় পক্ষের বেশ কিছু লোক কক্ষের বাইরে অবস্থান করেন।
আলোচনা চলাকালীন সময়ে রাত ৮টার দিকে অফিস কক্ষের বাইরে অবস্থানরতদের মধ্যে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে মারামারি বেঁধে যায়। এ সময় ফাঁড়ির ভেতরে থাকা রান্না করা খড়ির আঘাতে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন। উভয় পক্ষের মারামারি থামাতে গিয়ে আব্দুলপুর ফাঁড়ির দুজন পুলিশ সদস্য আহত হলে লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাময়িক চিকিৎসা নিয়ে তাঁরা আব্দুলপুর ফাঁড়িতে ফিরে যান।

এ বিষয়ে স্থানীয়রা বলেন, এ বিষয়কে কেন্দ্র করে এলাকায় উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ধারণা করা হচ্ছে, যেকোনো সময় অবস্থার অবনতি দেখা দিতে পারে।

চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম বলেন, ওই হাটবাজারের সরকারি জমি রয়েছে ২০ শতাংশ। অবশিষ্ট জমি বাংলাদেশ রেলওয়ের ও ব্যক্তিগত দোকান মালিকদের। হাটের খাজনা আদায় নিয়ে সমস্যা দেখা দেওয়ায় প্রশাসনের নির্দেশে সমঝোতার উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু দলীয় কোন্দলের কারণে পক্ষ-বিপক্ষে রূপ নিয়েছে। এভাবে চললে জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব পালন অসম্ভব হয়ে পড়বে।

লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহা. মোনোয়ারুজ্জামান বলেন, গতকাল রাতে ১৫ জনকে আসামি করে হাটের ইজারাদার বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখন এলাকার অবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীমা সুলতানা বলেন, বিষয়টি সমঝোতার মাধ্যমে নিরসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এখন মামলা হওয়ায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিজ্ঞাপন

BONOLOTA IT POS ads