আগামী ২রা মার্চ অনুষ্ঠিত হবে ঈশ্বরদী পৌর শ্মশানের ‘হর-মুন্ড মালিনী উৎসব’ » Itihas24.com
ঈশ্বরদী২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
ঈশ্বরদীর সবশেষ নিউজ । ইতিহাস টুয়েন্টিফোর
আজকের সর্বশেষ সবখবর

আগামী ২রা মার্চ অনুষ্ঠিত হবে ঈশ্বরদী পৌর শ্মশানের ‘হর-মুন্ড মালিনী উৎসব’

অপুর্ব চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২২ ১১:১২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঈশ্বরদীতে বসবাসকারী হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের জন্য হর-মুন্ড মালিনী উৎসব একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় অনুষ্ঠান। ঈশ্বরদী-পাকশী রেল লাইনের পার্শ্বে পাতিবিলে ঈশ্বরদী পৌর শ্মশান প্রতিষ্ঠার পর শ্মশান পরিচালনা কমিটি আয়োজন করে হর-মুন্ড মালিনী উৎসবের। হিন্দু পঞ্জিকা অনু্যায়ী প্রতিবছর শিব চতুর্দ্দশী তিথিতে উৎসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেই নির্ধারিত সময় অনু্যায়ী আগামী ২ মার্চ (বুধবার) অনুষ্ঠিত হবে এই উৎসব।

একসময় ঈশ্বরদীর হিন্দু সম্প্রদায় শিব চতুর্দ্দশী তিথি বা শিবের মাথায় জল ঢালা অনুষ্ঠান সেই ভাবে আয়োজন করতো না। ঈশ্বরদী পৌর শ্মশান প্রতিষ্ঠার পর এই অনুষ্ঠান ঈশ্বরদীর হিন্দু সম্প্রদায় অত্যন্ত সারম্বরের সাথে পালন করে আসছে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মতে,  হিন্দু ধর্মের কোনো ব্যক্তি পরোলোক গমন করলে ধর্মীয় রীতি-নীতি অনু্যায়ী শ্মশান ঘাটে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়। তাই একজন হিন্দু পরলোকগামী ব্যক্তির শেষ ঠিকানা এই শ্মশান হয়। এজন্য সকলে এখানে হর-মুন্ড মালিনী উৎসবের দিন তাদের আত্মীয়-স্বজন তথা সমগ্র হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাই- বোনেরা যারা ইহকালের মায়া ত্যাগ করেছেন প্রার্থনা করে তাদের আত্মার শান্তি কামনায় এবং তারা যেন স্বর্গবাসী হতে পারে। প্রতিবছর ঈশ্বরদী পৌর শ্মশানের এই হর-মুন্ড মালিনী উৎসব অত্যন্ত নিয়ম-নিষ্ঠা এবং ভক্তি-শ্রদ্ধার সাথে পালন হয়ে থাকে।

২০২০ সালে ঈশ্বরদী পৌর শ্মশান প্রতিষ্ঠার ৭ম বর্ষপূর্তি হতে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ঈশ্বরদী পৌর শ্মশানে নির্মিত হয়েছে মন্দির, শাবদাহের পাকা স্থান, তুলসি ভিটা এবং সর্বশেষ শ্মশানের শবদাহ করার স্থান বা চিতার পুনঃনির্মাণ করে একটি মডেল চিতা নির্মাণ করা হয়েছে এবং কিছু কাজ এখনো চলমান। সরকারি প্রকল্পে সম্পন্ন হয়েছে পুকুরে ধার বাধাই, শ্মশানের আঙ্গিনা পাকাপকরণের কাজ। এখনো বাকি রয়েছে পুকুরের ঘাট নির্মাণ কাজ। সরকারি এবং শ্মশান কমিটির নিজস্ব প্রকল্প পৌর শ্মশানকে আরো দৃষ্টিনন্দন এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠান পরিচালনা করার জন্য পরিপূর্ণ করে তুলবে বলে জানান কমিটির সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার কুন্ডু।

এক সময় ঈশ্বরদীর হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের জন্য মৃতদেহের সৎকার করা ছিল অত্যন্ত কষ্টসাধ্য একটি কাজ। মৃতদেহ নিয়ে যেত হতো ট্রাকে বা পিকআপে করে সাঁড়া ঘাটে। তখন শেষকৃত্য করা নিয়ে সৃষ্টি হতো অনেক প্রতিকূলতার। অনেক গরীব মানুষের পক্ষে স্বজনের মৃত দেহ সৎকার করার সামর্থ্য হতো না। এর জন্য ঈশ্বরদীর হিন্দু সম্প্রদায় একাট্টা হয়ে চেষ্টা করে একটি স্থায়ী শ্মশান ঘাট নির্মাণের। করতে হয়েছে ‘আমরা মরলে যাব কোথায়?’ শ্লোগানে মানবন্ধনও। অবশেষে ঈশ্বরদী পৌর শ্মশানের প্রতিষ্ঠা হয়। এখন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ এই শ্মশানের তাদের পরলোকগামী স্বজনদের শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে পারে কোনো প্রতিকূলতা ছাড়াই।

ঈশ্বরদী শ্মশানের হর-মুন্ড মালিনী উৎসবে ঈশ্বরদী তথা ঈশ্বরদীর বাইরে থেকে হাজার হাজার ভক্তের সমাগম ঘটে। এই আয়োজন ঈশ্বরদীসহ অত্র অঞ্চলের হিন্দু সম্প্রাদায়ের মাঝে ব্যাপকভাবে সাড়া ফেলেছে। জানা গেছে, ১লা মার্চ চার প্রহর ব্যাপী মহাদেবের পূজা এবং ২রা মার্চ ঈশ্বরদীর কলেজ রোডস্থ (বাজার রোডের) ঠাকুরবাড়ি মন্দির হতে জল নিয়ে সকাল দশটায় হবে পদযাত্রা, যা শেষ হবে ঈশ্বরদী শ্মশান মন্দিরে এসে। এরপর সারাদিন মহাদেবের মাথায় জল ঢালা অনুষ্ঠান এবং দুপুরে প্রসাদ বিতরণ, রাতে শ্মশান কালী দেবীর পূজা হবে।

বিজ্ঞাপন

BONOLOTA IT POS ads