নেতাকর্মীদের তোপের মুখে সভাস্থল ছাড়লেন এস এম কামাল » Itihas24.com
ঈশ্বরদী২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
ঈশ্বরদীর সবশেষ নিউজ । ইতিহাস টুয়েন্টিফোর

নেতাকর্মীদের তোপের মুখে সভাস্থল ছাড়লেন এস এম কামাল

বিশেষ প্রতিবেদক
মার্চ ২২, ২০২২ ৭:৩৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে কাউন্সিলরদের মতামত ছাড়াই নতুন কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এতে সভাপতি পদপ্রত্যাশী সাবেক সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র হাবিবুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী আবু সাঈদ আল মাহবুব চন্দনের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে হট্টগোল শুরু হয়।

তোপের মুখে পড়ে সভাস্থল ত্যাগ করেন সম্মেলনের প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগে দায়িত্বপ্রাপ্ত) এস এম কামাল হোসেন। কেউ কেউ তাকে উদ্দেশ করে কটু মন্তব্যও করেন। এতে অনুষ্ঠানস্থলে উত্তেজনা দেখা দেয়।মঙ্গলবার (২২ মার্চ) দুপুর ২টার দিকে পাঁচবিবি উপজেলা মিনি স্টেডিয়ামে আয়োজিত সম্মেলন অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে।

দীর্ঘ প্রায় ৯ বছর পর পাঁচবিবি উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন বেলা ১১টার দিকে পাঁচবিবি উপজেলা মিনি স্টেডিয়ামে শুরু হয়। এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন। সম্মেলন উদ্বোধন করেন জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান রকেট।

প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন মন্ডল। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন, জয়পুরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সামছুল আলম দুদু প্রমুখ। সম্মেলন সঞ্চালনা করেন পাঁচবিবি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেয়র হাবিবুর রহমান হাবিব।

প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন সভাপতি পদে আবু বক্কর সিদ্দিক মন্ডল ও সাধারণ সম্পাদক পদে কুসুম্বা ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান জিহাদ মন্ডলের নাম ঘোষণা করেন। তখন সম্মেলন স্থলে থাকা সভাপতি পদপ্রত্যাশী পৌর মেয়র হাবিবুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদকের পদপ্রত্যাশী আবু সাঈদ আল মাহবুব চন্দনের কর্মী-সমর্থকরা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নাম বাতিলের দাবি জানান।

এ সময় উত্তেজিত দলীয় নেতাকর্মীরা ধর-ধর বলে সম্মেলনের মঞ্চের প্রবেশ পথের সামনে গিয়ে এস এম কামাল হোসেনকে মঞ্চ থেকে নিচে নামতে বাধা দেন। উত্তেজিত নেতাকর্মীরা ‘টাকার বিনিময়ে কমিটি মানি না মানব’ স্লোগান দেন। পরে পুলিশ ও জেলা-উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের পাহারায় এস এম কামাল সম্মেলন স্থল ত্যাগ করেন। এ সময় উত্তেজিত নেতাকর্মীরা সম্মেলনের চেয়ার ভাঙচুর করেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক উপ-দপ্তর সম্পাদক মোজাম্মেল হক বলেন, আমরা গোপন ভোটের মাধ্যমে যোগ্য ব্যক্তিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করার অপেক্ষায় ছিলাম। আমাদের মতামত ছাড়াই দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন সভাপতি পদে আবু বক্কর সিদ্দিক ও সাধারণ সম্পাদক পদে জিহাদ মন্ডলের নাম ঘোষণা করেছেন। এ কারণে যোগ্য ব্যক্তি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হয়নি। আমরা নতুন কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে মানি না, মানব না। আমরা ফের গোপন ভোটে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন দাবি করছি।

দলীয় কর্মী বিপ্লব ব্যাপরী বলেন, টাকার বিনিময়ে কমিটি হয়েছে। আমরা এ কমিটি মানি না। পাঁচবিবিতে উপজেলা আওয়ামী লীগ ধ্বংসের চক্রান্ত চলছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

আটাপুর ইউনিয়নের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, যিনি এতদিন সভাপতি ছিলেন, তিনি আওয়ামী লীগের কোনো কাজই করেননি। আমাদের হাবিব ভাই, চন্দন ভাই হলে পাঁচবিবি উপজেলায় আওয়ামী লীগের দুর্গ গড়ে উঠতো। কিন্তু এটা হতে দিলো না কেন্দ্র থেকে এসে। একটা ভুয়া কমিটি উপহার দিল গেল। এটা পাঁচবিবির জনগণ মানে না।

জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য তিথি চৌধুরী বলেন, সেক্রেটারি পদ নিয়ে স্থানীয় কাউন্সিল ও নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভ এবং কষ্ট দেখা দেয়েছে। সেক্রেটারি পদে যদি চন্দনের নাম আসতো তাহলে আজকে যে বিশৃঙ্খল পরিবেশের সৃষ্টি এবং অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে গেল এটা হতো না। সবার মনে একটা শান্তি বিরাজ করতো।

পাঁচবিবি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী ছিলেন আবু সাঈদ আল মাহাবুব চন্দন। তিনি  বলেন, যেহেতু এই কমিটি জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের দিয়েছেন। সেই জায়গায় আমারমতো ক্ষুদ্র কর্মী হয়ে কথা বলার দুঃসাহস বা মন্তব্য করা যাবে না। যেহেতু জননেত্রী শেখ হাসিনা বানাইছে, ওকে। ভালো হোক, মন্দ হোক এটাই ওকে।

পাঁচবিবি পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বলেন, দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দলের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। আমি এ কমিটি মেনে নিয়েছি।
জানতে চাইলে পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কমর্কতা (ওসি) পলাশ চন্দ্র দেব বলেন, পাঁচবিবি উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে দ্বিতীয় অধিবেশনে হট্টগোল হয়েছিল। পরে পরিস্থিতি শান্ত হয়েছে।

author avatar
SK Mohoshin

বিজ্ঞাপন

BONOLOTA IT POS ads